রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র যখন রিকশা চালক

"রাজশাহীতে প্রাইভেট টিউশনিতে পয়সা কম, তাই প্রতিমাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় এসে রিকশা চালাই।" রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে ঘোরাতে খুব সহজেই এ কথাগুলো বললেন মো. মনিরুজ্জামান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত এই শিক্ষার্থী প্রায় ১০ বছর ধরে এভাবেই নিজের ও ছোট দুই বোনের পড়াশেনার খরচ যোগাড় করছেন। গতমাসের শেষ সপ্তাহে মগবাজার থেকে পরিবাগ যাওয়ার পথে তিনি আরোহী প্রতিবেদককে জীবন যুদ্ধের এই গল্প শোনান।

মনির জানান, রাজশাহীতে নবম-দশম বা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী প্রাইভেট পড়ালেও মাসে দুইশ টাকার বেশি পাওয়া যায় না। অথচ ঢাকায় প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে তিনি প্রায় হাজার টাকা আয় করেন। মনির বলেন, ‘এক্ষেত্রে শারীরিক পরিশ্রমটা একটু বেশিই হয়। কিন্তু সৎ পথে থেকে কম সময়ে এত টাকা আয় করার অন্য কোনো উপায় আমি পাইনি।’ এরপরও মনিরের আক্ষেপ যে তিনি শুধু টাকার অভাবে বোনদের বিশ্ববিদ্যালয়ে
‘অনার্স’ পড়াতে পারেননি। বাধ্য হয়ে এখন তারা বাড়ির পাশের কলেজে ‘ডিগ্রি’ পড়ছেন।

এসএসসি পাশ করার পরই মনির প্রতি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় রিকশা চালানো শুরু
করেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনি শুধু মিরপুর এক নম্বরের
তাইজুল মিয়ার গ্যারেজের রিকশাই চালান এবং ওই গ্যারেজেই থাকেন। মনির বলেন, "এই কাজটি কখনোই আমার খারাপ লাগেনি। কাজ তো কাজই। আমি তো আর চুরি-ছিনতাই করছি না।"

কয়েক বছর আগে মাস তিনেকের জন্য চাকরিও করেছিলেন মনির। কিন্তু পরীক্ষার আগে ছুটি না পাওয়ায় তিনি সেটি ছেড়ে দেন। মনির আরো জানান, এ বছরের
মাঝামাঝি সময়ে মাস্টার্স শেষ হওয়ার পর তিনি বিসিএস পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি নেবেন। 

No comments:

Post a Comment

Coveroo custom phone covers and cases

visitors

free counters