স্মরণকালে এরকম ঠান্ডা বাংলাদেশের মানুষ দেখেনাই

স্মরণকালে এরকম ঠান্ডা বাংলাদেশের মানুষ দেখেনাই। ৩.২, ২.৮, ৩.৯ সংখ্যাগুলি আমাদের কাছে এখন পরিসংখ্যান মাত্র, অনুভূতি নয়। অনুভূতি তার কাছে, যাকে প্রতিটি রাত পার করতে হয় আগামীকালের ভোর দেখতে পারবে কিনা তার অপেক্ষায়। শীতল মৃত্যু সেই মায়ের কাছে, যার সন্তানটিকে বুকে জড়িয়ে ছেঁড়া শাড়িতে ঢেকে একটু ওম দেবার চেষ্টা করেন। ধীরে ধীরে ঠান্ডায় জমে যাওয়া যে মৃত্যু, তাকে অবহেলা করে বেঁচে থাকা অশীতিপর বৃদ্ধের জন্য কতটুকু অসাধ্য সেটা হাজার টাকা দামের চাইনিজ কম্বলের নিচে শুয়ে চিন্তা করাটাও আমাদের জন্য বাতুলতা মাত্র।

এরকম হাজার কথায় মুখরিত সারা ফেসবুক, অসংখ্য প্রচেষ্টা চলছে শীতবস্ত্র/কম্বল পৌঁছে দেয়ার উত্তরবঙ্গের সেই মায়েদের কাছে, সেই বৃদ্ধ মানুষটির কাছে। সেই মিছিলে সামিল আমরাও। প্রচলিত অবস্থায় যারা সাহায্য পৌছুনোর চেষ্টা করেন, তাঁরা কতটুকু দূর্গম এলাকায় পৌছুতে পারেন জানিনা, আমরা চাইছি যেখানে কেউ সাধারনত যায় না, যেতে পারেনা যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতিকূলতার দরুন, সেখানে পৌছে দিতে আমাদের সামান্য সাহায্যের হাতটুকু। হয়তো একটি মানুষের জীবন বাঁচানোর মাঝ দিয়েই আমরা আমাদের নাগরিক কর্তব্যের কিছুটা দায় পরিশোধ করতে পারবো।

যেতে চাইছি আমরা কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত চরগুলিতে। নৌকাছাড়া যেখানে যাবার কোন উপায় নেই। গত বন্যায় আমরা যখন নৌকা নিয়ে চরে ঘুরে ঘুরে ১৮০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরন করছিলাম, হাহাকার শুনে খুব বেশি কুঁকড়ে গিয়েছিলো মনটি। "বাহে বানোতে ভাসি গেইলং। কাইও হামার খোঁজ নিবার আইসে না। "- কথাটি বুকে বেজেছিলো খুব। আমরা চাই সেই মানুষ গুলির খোঁজ নিতে। ক্যামন আছেন তাঁরা?

আমাদের প্রধান টার্গেট কম্বল পৌঁছে দেয়া বর্ষায় বানভাসী, শীতে মৃতপ্রায় এই মানুষগুলির কাছে। প্রায় তিন-চারশ চরের সবার কাছ্বে হয়তো পারবো না, আপনাদের সবার সাহায্যে যতদূর সম্ভব আমরা ঠিক ততটুকুই যেতে চাই। প্রতিটি মানুষের হাতকে এক করে নিয়ে আমরা হয়ে উঠতে চাই শক্তিশালী, দূর্গত মানুষের সাহাযার্থে।

No comments:

Post a Comment

Coveroo custom phone covers and cases

visitors

free counters