শুধুই ভয়ঙ্কর এক নিঃসীম ও পরম শূন্যতা
ছয় তলা বিল্ডিংয়ের ছাদের এক কর্নারে বসে অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। নিচে রাজপথ দিয়ে বাস-ট্রাক চলাচল করছে। যান-বাহনের শব্দ আর নগরজীবনের কোলাহল মিলে-মিশে একাকার হয়ে গেছে। মনটা আজ প্রচণ্ড রকমের বিক্ষিপ্ত তাই এইসব শব্দ আমার ভেতর কোনোই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারছে না। মানব জীবনের অসারতা নিয়ে ভাবছি। জীবনের উদ্দেশ্যটা আসলে কী? পেছনে মহাকাল, সামনেও মহাকাল। এই মহাকালের তুলনায় মানুষের জীবনের স্থায়ীত্ব খুবই নগন্য। আর এত তুচ্ছ কেন মানুষের জীবন যে খুবই সাদামাটা একটা কারণে কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানেই সেটা শেষ হয়ে যেতে পারে?! এখন এই ছয় তলার ছাদ থেকে যদি নিচে লাফ দিই......??!! মাত্র কয়েক সেকেন্ডের অপেক্ষা... তারপর সব শেষ!! যে মহাকালের অসীম শূন্যতা থেকে আমার 'আমি' সৃষ্টি হয়েছিল, সেই অসীম শূন্যতাতেই আবার হারিয়ে যাবে আমার সেই 'আমি'! 'আমি' নামক কোনো অস্তিত্বই থাকবে না আর, থাকবে শুধুই ভয়ঙ্কর এক নিঃসীম ও পরম শূন্যতা, যেখানে 'শূন্যতা'ও অনুপস্তিত!! এভাবে ভাবলে ভেতরটা কেন জানি হাহাকার করে ওঠে! কিংবা এমন কি হতে পারে না যে আমার এই জীবনের একটা সমাপ্তি থাকলেও আমার 'আমি'র আসলে কোনো ধ্বংস নেই?! হয়ত সেই নিঃসীম শূন্যতার ভেতর থেকে নতুন কোনো মহাবিশ্বে নতুন কোনো 'অস্তিত্ব'র ভেতরে (হয়তো মানুষ, কিংবা এমন কিছু যেটা সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই) আবার জন্ম নেবে এই 'আমি'!! হয়তো এভাবেই কালে কালে 'আমার' অস্তিত্ব ছিল!! এখন যে জীবনটা আমি দেখছি সেটা সেই অস্তিত্বগুলোরই একটা মাত্র!!
মাথাটা গুলিয়ে যাচ্ছে আমার! পাগল হয়ে যাচ্ছি কী না বুঝতে পারছি না!!
No comments:
Post a Comment