মহান আল্লাহর মেহেরবাণীতে এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠেছে বাংলাদেশ। নিজেদের মাটিতে এশিয়া কাপের ১১তম আসরের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে এ যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উপমহাদেশের অপর ক্রিকেট পরাশক্তি পাকিস্তান।
এশিয়া কাপের উদ্বোধনী খেলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততে জিততে ২১ রানে হেরে গিয়েছিল টাইগাররা। ওই ম্যাচে শেষ ৬ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রানের। কিন্তু ১৪ রান যোগ করতেই পাকিস্তানি বোলারদের তোপের মুখে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম খেলায়ই জানান দিয়েছিল বাংলাদেশ সহজে ছেড়ে দেবার পাত্র নয়। তার প্রমাণ দিলো পরের ম্যাচেই। অর্থাৎ দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের দেয়া ২৯০ রানের টার্গেট তামিম, সাকিব, নাসির, জহুরুল ও মুশফিকের ব্যাটিং নৈপুণ্যে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে দেয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতকে। শচিনের শততম সেঞ্চুরি চাপা পড়ে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় জয়ে।
তিন খেলায় দুই জয়ের সাথে এক পয়েন্ট বোনাস পয়েন্ট যোগ হওয়ায় সবার আগে ফাইনালে ওঠে পাকিস্তান। ভারত শ্রীলঙ্কাকে ৫০ রানের হারানোর পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও সহজে জয়ী হওয়া ভারতের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৮।
এশিয়া কাপের সর্বশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারলেই বাংলাদেশ ফাইনালে খেলবে। এ অবস্থায় মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাট করতে পাঠায় লঙ্কানদের। বাংলাদেশের বোলারদের বোলিং নৈপুণ্যে ৪৯.৫ ওভারে ২৩২ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস।
খেলার মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টি শুরু হলে ডার্ক ওয়ার্থ লুইস ম্যাথডে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার ম্যাচে জিততে হলে বাংলাদেশের প্রয়োজন পড়ে ৪০ ওভারে ২১২ রানের।
তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানের ফিফটির পর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে নাসির-রিয়াদের দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ।
১১৬ রানে তামিম ইকবাল এবং ১৩৫ রানে সাকিবের বিদায়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দলের এই বিপর্যয়ে হাল ধরেন সহ-অধিনায়ক মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ এবং তরুণ অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। এই জুটি ১৩.৫ ওভার মোকাবেলায় ৮৩ রানের অপরাজিত পার্টনারশীপ গড়লে ১৪ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে ২১২ রান করে। ফলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ।
নাসির হোসেন ৩৬ এবং মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন।
১১৬ রানে বিদায় নেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর ১৩৫ রানে আউট হন সাকিব আল হাসান। এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ে আবারো বিপদে পড়েছে স্বাগতিকরা। সাকিব ৪৬ বলে সাতটি চারের সাহায্যে ৫৬ রান করেন।
৪০ রান করতেই প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপদে পড়া বাংলাদেশকে চতুর্থ উইকেট জুটিতে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান ৭৬ রানের পার্টনারশীপ গড়েন। ৫৭ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৫৯ রান করেন তামিম। তামিমের উইকেটটি নেন সেনানায়েকে সেনানায়েকের বলে থিরিমান্নের তালুবন্দী হন তামিম।
এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর স্কোর বোর্ডে আর এক রান যোগ করতেই মুশফিকুর রহিমকে সরাসরি বোল্ড করে দেন নুয়ান কুলাসেকারা। মুশফিক মাত্র ১ রান করেন।
৩৯ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে টাইগারদের। লাকমালের বলে ক্যাচ আউট হন জহুরুল ইসলাম। জহুরুল মাত্র ২ রান করেন।
১.৪ ওভার মোকাবেলা করতেই প্রথম উইকেটের পতন ঘটে স্বাগতিকদের। উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শ্রীলঙ্কার পেসার নুয়ান কুলাসেকারা। নুয়ান কুলাসেকারার বলে সরাসরি বোল্ড হন ৬ রান করা নাজিমুদ্দিন। সাত বল খেলে একটি বাউন্ডারি হাঁকান নাজিমুদ্দিন।
লঙ্কান বোলারদের মধ্যে নুয়ান কুলাসেকারা ও সেনানায়েকে দুটি করে এবং লাকমাল একটি উইকেট নেন।
এর আগে টসে হেরে শ্রীলঙ্কা ৪৯.৫ ওভারে ২৩২ রানে গুটিয়ে যায়। সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান কাপুগেডারা। এছাড়া থিরিমান্নের ৪৮ এবং উপল থারাঙ্গা ৪৮ রানের ওপর ভর করে দুইশত রানের কোটা পার করে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নাজমুল হোসেন তিনটি, আবদুর রাজ্জাক ও সাকিব দুটি করে এবং মাশরাফি ও শাহাদাত একটি করে উইকেট নেন
No comments:
Post a Comment